জানলার ওপারে
'ঠিক পথের পাঁচালির মত!' 'আমার তো পুরো ডুয়ার্স লাগছে। কত্ত সবুজ!' 'দেখার চোখ আছে বটে। একদম যেন আমার মামাবাড়ি!' 'হেব্বি!' আলাদা আলাদা চার-পাঁচটা কমেন্টে চোখ বোলাতে বোলাতে মনে হচ্ছিল ওদের সবার কাছে জানলার ওপারটা অন্য অন্য রকম। আবার কারোর কাছে নেহাতই স্যাঁতস্যাঁতে গেঁয়ো জায়গা বলে মনে হচ্ছে। ভার্চুয়াল দুনিয়া বলে একটা বাহ্ কিংবা তোফা জুড়ে দিয়েছে। কিন্তু ঠিক এই জানলাটার ওপারেই আমার সর্বস্ব। আমার গোটা দুনিয়াটা। এই যে মরচে ধরা গ্রীলগুলোর ওপারে প্রায় বিশ-পঞ্চাশহাত দূরে কবেকার সেই বটগাছটা ওর যাবতীয় অতীত ইতিহাস নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। একে আমি অস্বীকার করি কী করে। খাতার কোনো এক পাতার পিঠে পেন্সিল দিয়ে দাগ কাটার পর হাজার ইরেজার ঘসলেও যেমন দেবে যাওয়ার একটা চিহ্ন থেকে যায়; অনেকটা তেমনই। আমার সুখ, দুঃখ, ভালোলাগা মন্দলাগা, বুকচেরা অব্যক্ত কথা সবকিছুই নির্দিষ্ট এই জায়গাতেই রয়ে গেছে আজ কুড়িটা বছর ধরে। আমি পঞ্চাশ পেরিয়েছি। কিন্তু সেই আমি আজও বটের সামনে দাঁড়াই তেত্রিশ বছরের যুবক হয়েই। রোদ, ঝড় জল উপচে প্রকৃতি মাখামাখি একটা আলতো আদর মিশে আছে ওখানের মাটি